রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের বিষয়ে দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত হবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘কোনো হঠকারী পদক্ষেপ নয়, সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় সব কিছু করতে হবে।’
রবিবার সকালে শেরেবাংলানগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের পর সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব এ কথা জানান।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি আন্দোলন করছে। গতকাল আপনার সঙ্গে তারা বৈঠক করেছে।
রাষ্ট্রপতি প্রশ্নে আপনাদের অবস্থান কী? এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, বিএনপির অবস্থানের খবর তো আমরা এভাবে দেব না… আমাদের ফোরাম আছে। সেই ফোরামের মিটিং হবে। সেখানে আলোচনা করে আমাদের অবস্থান আমরা পরিষ্কার করব।
তবে আমরা এর আগেও বলেছি, আমরা গণ-অভ্যুত্থানের যে ফলাফল, সেই ফলাফলের ফসলকে ঘরে তোলার জন্য বাংলাদেশে বিপ্লবকে যদি আপনার সুসংহত করতে হয়, তাহলে যেটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তা হলো জাতীয় ঐক্য এবং কোনো রকম হঠকারী পদক্ষেপ গ্রহণ না করে একটা সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় সবগুলো কাজ করার প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।
অতিদ্রুত সংস্কার করে নির্বাচন চাই’
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বারবার বলছি, নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করে অতি দ্রুত একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। সেটা একমাত্র সব সংকট নিরসন করতে পারে।
নির্বাচন বিলম্ব হলে সংকট প্রকট হবে বলে মনে করেন কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা আমরা বারবার বলছি, পার্টির তরফ থেকে বলা হচ্ছে যে যত দ্রুত সম্ভব সাধারণ নির্বাচন… নিরপেক্ষ নির্বাচন করা দরকার এবং একটা সাংবিধানিক রাজনৈতিক শক্তির দেশের দায়িত্ব নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করা দরকার।
এ সময় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আন্দোলনে যুবদলের ভূমিকার প্রশংসা করেন বিএনপির মহাসচিব।
জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বেলা সাড়ে ১১টায় সংগঠনটির সভাপতি এম মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপি মহাসচিব শেরেবাংলানগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতির সমাধিস্থলে যান। তারা প্রয়াত নেতার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।
এ সময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান রবকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, কৃষকদলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনসহ যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী মেডিক্যাল ক্যাম্প ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এ সময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনসহ যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এই প্রথম শেরেবাংলানগরে জাতীয়তাবাদী যুবদলের হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে চন্দ্রিমা উদ্যানে প্রবেশ করে। তারা ‘আজকের এই দিনে জিয়া তোমায় মনে পড়ে’, ‘খালেদা জিয়ার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘তারেক রহমান বীরের বেশে আসবে ফিরে বাংলাদেশে’ ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত করে তোলে গোটা এলাকা।