"

কেমন রাজনীতিতে চাই: আলোচনায় সব সংগঠনের ছাত্রনেতারা


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ক্যাম্পাসে ‘কেমন ছাত্র রাজনীতি চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় দেশের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।

রোববার (২৭ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু চত্বরে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

সভায় বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়াবিন মোল্লা, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবিরের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক জুবায়ের হাসান, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক প্রমুখ অংশ নেয়।

এ সময় ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক জুবায়ের বলেন, ‘কেমন রাজনীতি চাইয়ের উত্তরে আমি বলব- রাজনীতি হবে ছাত্রদের জন্য।
শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে কাজ করবে এমন রাজনীতিই শিক্ষার্থীরা চায়। কিন্তু তাদের বিগত সময়ের করাল রাজনীতির ছায়া তাদের ব্রেনওয়াশ করেছে। শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের রাজনীতি করতে হবে।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহাবস্থান তৈরি করতে হবে। সবাই যেন  সব দলের বিরুদ্ধে আলোচনা করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এসময় ডাকসুর কোনো বিকল্প নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, ৫ আগস্টের আগে ছিল অপরাজনীতি। রাজনীতির নামে ফাও খাওয়া, হল দখল, শিক্ষার্থী নির্যাতন করেছে ফ্যাসিবাদী সংগঠনের দোসর ছাত্রলীগ। আমরা আগামীতে এ ধরনের বর্বরতা দেখতে চাই না। শিক্ষার্থীরা যেন প্রথম বর্ষেই হলে সিট পায়, সেটি আমাদের দেখতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দল যেন শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাণিজ্য করতে না পারে, সেটিও আমাদের দেখতে হবে, রাজনীতি হবে শিক্ষার্থীবান্ধব।

এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, আমি সূর্যসেন হলের ছাত্র ছিলাম। আমি দেখেছি কীভাবে কনকনে শীতের রাতে ছাত্রদের হল থেকে বের করে দিত। ছাত্রলীগের প্রোগ্র্যাম না করার কারণে সারারাত পাশবিক নির্যাতন করা হতো। ছাত্ররাজনীতির নামে যেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামের করতে না হয় সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। রাজনীতি যেন শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করে। শিক্ষার্থীরা যেন সিটের জন্য কোনো নেতার দ্বারস্থ না হয়, সেটা হল প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক নাসির উদ্দীন বলেন, ছাত্ররাজনীতি চাই কিনা আমি সে প্রশ্নের উত্তরে প্রথমেই বলতে চাই- ছাত্ররাজনীতি দরকার আছে। যদি ছাত্র রাজনীতি না থাকে তাহলে শিক্ষার্থীরা বিগত সরকারের ১৬ বছরের বর্বরতা সম্পর্কে জানতে পারবে না। ছাত্ররাজনীতি যেন শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার অনুকূলে থাকে, তারা যেন প্রথম বর্ষেই হলে সিট পায়, তাদের যেন আবাসন নিয়ে চিন্তা করতে না হয় আমরা এমন ছাত্ররাজনীতি চাই।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্যে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, গত ৫৩ বছরের রাজনীতি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে ছাত্র অধিকার পরিষদ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগী সংগঠন। আমাদের এমন কোনো নেতা নেই যাদের গায়ে ছাত্রলীগের নির্যাতনের চিহ্ন নেই। গতবছর এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ। আমার সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য প্রক্টর ছিলেন গোলাম রব্বানী। তার ইঙ্গিতে ছাত্রলীগের নেতারা ছাত্রদের পেটাত। তিনি চেয়ে চেয়ে দেখতেন।

এ সময় তিনি আওয়ামীলীগ ও তার দোসরদের নিষিদ্ধের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সুষ্ঠু রাজনীতির ধারা চালু রাখার ব্যাপারেও মত দেন।

ডেইলি-বাংলাদেশ

Previous Post Next Post

Random Manga

Ads

نموذج الاتصال