"

দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন!

স্বৈরাচার সরকারে আমলে বিগত ১৫ বছরে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন কিছু অযোগ্য রাজনৈতিক নেতা ও আমলারা। এদের কাজের গঠনমূলক সমালোচনা করাও ছিলো বড় অপরাধ। এর মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও বাগিয়ে নিয়েছিলেন শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদ। দায়িত্ব নিয়ে প্রায় চার মাস পর গিয়েছিলেন নিজ দপ্তরাধীন শিক্ষা ভবনে। এমন ভাবলেশহীন অযোগ্য প্রতিমন্ত্রী পেয়ে শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা প্রকাশ করেছিলেন একরাশ হতাশা।

তবে সবথেকে বেশি হতাশার বিষয় হলো, মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা না থাকায় তাকে চালাতেন কর্মচারীরা। মাঝেমধ্যে এতে সহায়তা করতেন বাংলাদেশ সরকারের উপসচিব পদের একজন পিএস।তিনি সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার চাঁপা। তার অযোগ্যতার গুঞ্জন এতোদিন লোকমুখে শোনা গেলেও এবার সত্যতা মিলেছে দেশের শিক্ষাবিষয়ক একমাত্র জাতীয় প্রিন্ট পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে।শামসুন নাহার চাঁপা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের বোন। চাঁপার রাজনীতি শুরু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় থেকেই। তিনি শামসুন্নাহার হলের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ছিলেন তিনি। এরপর সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা হিসেবে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে অবসরে যান চাঁপা। তবে অবসরে গিয়েও সক্রিয় হন রাজনীতিতে। ভাইয়ের রাজনীতির প্রভাবকে পুঁজি করে এগিয়ে গেছেন শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের অংশীদার হিসেবে।

অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সাংবাদিকসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে সামনে এবং পেছনে দুজন পিয়ন দাঁড়িয়ে থাকতেন যারা সার্বক্ষণিক দেখা করতে আসা সবার দিকে বিশেষ নজরে রাখতেন। তাদের প্রতিক্রিয়া এমন ছিলো, যেনো তারাই প্রতিমন্ত্রীর থেকে বড় কর্তা। এমন পরিস্থিতিতে বিব্রতকর অবস্থার মুখোমুখি হতে হতো সাক্ষাতকারীদের। 

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই পিএস জাকারিয়া এবং তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক পাহারারত থাকা তার নিজের এলাকার দুজন প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরসহ তাকে চালাতেন। তাদের একজনের নাম রওশন রিপন।

গত ৩১ জুলাই দৈনিক আমাদের বার্তায় ‘শিক্ষাভবন যখন কর্মকর্তার নোট-গাইড বিক্রির দোকান’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শামসুন নাহার চাঁপা হাজির হয়েছিলেন শিক্ষা ভবনে। সেখানেও দেখা যায় তার সঙ্গে থাকা সেই কর্মচারীরা হাজির।

ঠিক সেদিনই সন্ধ্যায় প্রতিবেদনের মতামত জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার প্রতিবেদক হাজির হন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর বাসায়। সেখানেও দেখা গেছে, সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় সাংবাদিকের সামনে এবং পেছনে দুজন পিয়ন দাঁড়িয়ে নজরদারি করছিলেন। যা একজন প্রতিমন্ত্রীর কতোটা অদক্ষতা প্রমাণ করে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।

এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে যারা সাবেক এই শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য তার অফিস বা বাসায় গিয়েছেন সবাই দৈনিক আমাদের বার্তার প্রতিবেদকের কাছে একই মন্তব্য করেছেন।

এতে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর দক্ষতা নিয়ে। অনেকে মন্তব্য করেছেন রোবট প্রতিমন্ত্রী হিসেবে। তাকে কন্ট্রোলের জন্য যেহেতু সর্বদা দুজন পিয়ন থাকতেন তাই এমন মন্তব্য করাটা অযৌক্তিকও নয়। 

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
Previous Post Next Post

Random Manga

Ads

نموذج الاتصال