তাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন? এর কারণ কি?
রিজভী বলেন, আজকে সালমান এফ রহমান, আজিজ খান একের পর এক যারা আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে আর সেই কলাগাছ হয়েছে তারা ন্যায়-নৈতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে নয়, তারা হয়েছেন অনৈতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে। শেখ হাসিনা যাদের আনুকূল্য দিয়েছেন তারাই আজকে লুটেপুটে, চেটে টাকা পাচার করে আজকে কেউ কেউ বিদেশে অবস্থান করছেন। এই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তিনি সুযোগ দিয়েছিলেন তোমরা মার, ধরো, লুটপাট করে, কিন্তু আমাকে তোমরা ক্ষমতায় রাখ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আলুর কেজি ৭০ থেকে ৭৫ টাকা এখনো যদি থাকে তাহলে মানুষের যে বিশ্বাস যে আস্থা সেই আস্থা বিশ্বাস তো কমতে থাকবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি। আজকে ডিম, তেল এগুলোর দাম এখনো কয়েকটি কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করছে। সে কোম্পানিগুলোকে আপনারা ধরছেন না কেন? এই সিন্ডিকেটবাজদের আপনারা ধরছেন না কেন? কেন ডিমের দাম এখনো আকাশচুম্বী থাকবে? কেন সয়াবিন তেলের দাম এখনো আকাশচুম্বি থাকবে? এই যে নিম্ন আয়ের মানুষ কৃষক, সিএনজিচালক আগে যেমন ছিল এখনো তাই থাকছে- কেন এই পরিস্থিতি হবে? এখন তো মানুষ একটু সুখের মুখ দেখবে, সেই সুখের মুখ এরা যদি না দেখে এই যে গণতান্ত্রিক চেতনা, এই যে আত্মত্যাগ, এই যে রক্তপাত, এই যে তাদের অকাতরে জীবন দেওয়া- এটা তো সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হবে। আর কয়েকটা আপনার সুখে থাকা উপদেষ্টারা এসে বড় বড় কথা বলবে আর তারা নিজের মতো করে যা ইচ্ছা তাই করবে- এটা তো চলতে দেওয়া যায় না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, অনেকেই দীর্ঘদিন বঞ্চিত ছিলেন শুধু চাচা, মামা, খালু অথবা ছাত্রজীবনে বিরোধী দলের ছাত্র রাজনীতি করেছেন বলে যারা ক্যাডার সার্ভিসে এএসপি ছিলেন তারা এএসপিই থেকে গেছেন। তারা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্থাৎ ড. ইউনূস সাহেবের সময় হয়তো প্রমোশন পেয়ে একটা জায়গায় আছেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যারা বঞ্চিত ছিল, যাদের প্রমোশন হয়নি, পদোন্নতি হয়নি- তাদের উপরই বেশি অ্যাটাক করা হচ্ছে। কোনো কোনো উপদেষ্টা এ জিনিসটা করছে। আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি- ছাত্রজীবনে হয়তো ছাত্রদল করেছে কিন্তু সে তো মেধার জোরে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এসেছে। গত ১৫-১৬ বছরে তাদের কোনো পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। এখন তো তাদের একটি জায়গায় থাকার কথা। কিন্তু চুপচাপ ঘাপটি মেরে থাকা আন্দোলন সংগ্রামের কোনো স্পিরিটের সঙ্গে যাদের কোনো সম্পর্ক নেই আমি শুনি তারা সুশীল সমাজের লোক। তারা হচ্ছে গুণীজন তাই তাদের উপদেষ্টা করা হয়েছে।এই গুণীজন উপদেষ্টারা তারা তো চাকরিজীবীর মতো কাজ করছে।
আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্তদের দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হবে জানিয়ে রিজভী আরও বলেন, আমি এবং বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ গত ৪-৫ দিন আগে পঙ্গু হাসপাতালে গিয়েছিলাম। দেখলাম এখনো অনেকেই হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। কারো পিঠের চামড়া খুলে গেছে, কারো পা নেই, কেউ কেউ অন্ধ হয়ে গেছেন- এদের দায়িত্ব কি রাষ্ট্র নিবে না?এদের দায়িত্ব তো রাষ্ট্রকেই নিতে হবে।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আরিফুর রহমান তুষার প্রমুখ