"

কোণঠাসা জাতীয় পার্টি হতাশ নেতাকর্মীরা


ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশের রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। ছাত্র-জনতার বাধার পরিপ্রেক্ষিতে দলটি ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষেধাজ্ঞা, কর্মসূচি স্থগিত করা, দলের নেতাদের নামে মামলা, দলীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়াসহ নানা কারণে দিশেহারা জাপা। এই পরিস্থিতিতে উত্তরণের কোনো উপায় এখনো খুঁজে বের করতে না পারায় সাংগঠনিকভাবে দুর্বল দলটির কেন্দ্রীয় নেতা থেকে তৃণমূলের কর্মীরা পর্যন্ত ভেতরে ভেতরে হতাশ হয়ে পড়েছেন।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে জাপা বিরোধী দলে এবং কখনো সরকারি দলের অংশ হয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি চালিয়েছে; কিন্তু গত ৫ আগস্ট পরবর্তী উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এই দলটিকে বিগত সরকারের দোসর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ নেতাকর্মীদের নামে দেওয়া হয়েছে মামলা। দলের চেয়ারম্যান-মহাসচিবসহ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে


গত ২ নভেম্বর প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয় দলটি; কিন্তু ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার ব্যানারে একটি গোষ্ঠী তাদের দলীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দেয়। এমনকি সমাবেশ প্রতিহতের ঘোষণা দেয়। এমন পরিপ্রেক্ষিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও জাতীয় যে কোনো ইস্যুতে সমাবেশ করার বিষয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকলেও মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যায় দুই পক্ষ। সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি সামাল দিতে ঢাকা মহানগর পুলিশ জাপার কার্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে গত ১ নভেম্বর রাতে। পরবর্তী সময়ে দুপক্ষই তাদের কর্মসূচি স্থগিত করে।


এরপর থেকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে জাপাকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে চাপ দেওয়া হয়। তবে এখনো কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করেনি দলটি। এমনকি কোনো অভ্যন্তরীণ বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে দলের শীর্ষ নেতারা স্থগিত কর্মসূচি পুনরায় চালুর ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন।


এ প্রসঙ্গে জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু কালবেলাকে বলেন, স্থগিত হওয়া কর্মসূচি শিগগিরই বাস্তবায়ন করব। দলীয় অভ্যন্তরীণ সভার মাধ্যমে কর্মসূচির বিষয়ে অবহিত করা হবে। আমরা কোনো চাপের কাছে মাথা নত করিনি, করবও না। কারও সঙ্গেই আমাদের বিরোধ নেই। সুতরাং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে নিতে কারও সঙ্গে আপসের প্রশ্নই আসে না।


এ বিষয়ে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী কালবেলাকে বলেন, আমরা চুপসে যাইনি। বরং দলীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া, কর্মসূচি প্রতিহতের ঘটনায় চাঙ্গা হয়েছে দল। ছাত্র আন্দোলন সাধিত হয়েছিল গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে। এখন কোনো গোষ্ঠী যদি জাতীয় পার্টির মতো দলকে রাজনীতি করতে দিতে না চায়, তবে তা কারও জন্যই সুখকর হবে না। শিগগিরই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে জাতীয় পার্টি।
Previous Post Next Post

Random Manga

Ads

نموذج الاتصال