জীবিত স্বামীকে গণঅভ্যুত্থানে ‘মৃত’ দেখিয়ে স্ত্রীর মিথ্যা মামলা
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনীর গুলিতে স্বামী আল-আমিন নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে মামলা করেন কুলসুম নামে এক গৃহবধূ। এ ঘটনার তিন মাস পর তার স্বামী থানায় এসে জানান, তার অজান্তে স্ত্রী তাকে ‘মৃত’ দেখিয়ে মিথ্যা মামলা করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার আশুলিয়ায়।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাতে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবির ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে সোমবার (১১ নভেম্বর) সিলেটের মহানগর থানার দক্ষিণ সুরমা থানায় এসে হাজির হয়ে পুলিশকে বিস্তারিত জানান আল-আমিন।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবির বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বামীকে নিহত দেখিয়ে একজনের স্ত্রী হত্যা মামলা দায়ের করেছিল। আমরা ভিকটিমকে উদ্ধার করে আশুলিয়া থানা হেফাজতে রেখেছি। তাকে জবানবন্দির জন্য বুধবার (১৩ নভেম্বর) আদালতে তোলা হবে। একই সঙ্গে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগে স্ত্রীর বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অন্যদিকে স্ত্রী কুলসুমের করা মামলার এজাহারে জানা যায়, আল-আমিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় ছাত্রদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন। সেদিন বিকেল ৪টার দিকে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের খবর আসলে আন্দোলনরতরা বিজয় মিছিল করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের কর্মীরা পরাজয় মেনে নিতে না পেরে বাইপাইলে এলোপাতাড়ি গুলি ও লাঠি চার্জ করেন। তখন আন্দোলরতরা বাইপাইল এমপি মার্কেটের সামনে অবস্থান নেন। পরে সেখানে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী নির্বিচারে ছাত্র, সাধারণ মানুষ ও গার্মেন্টস শ্রমিকদের ওপরে অমানবিকভাবে গুলি চালায়। গুলিতে আল-আমিন মারা যান। পরে ৬ আগস্ট আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালে আল-আমিনের স্ত্রী কুলসুম জানতে পারেন, অনেক লাশ গোসল করিয়ে জানাজা পড়িয়ে আশুলিয়ার দরগাপাড় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। সেখানে কুলসুম গিয়ে ডকুমেন্ট, ছবি এবং ভিডিও দেখে তার স্বামী আল-আমিনের মরদেহ দাফন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন। এর পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কুলসুমকে বিভিন্ন কাগজপত্র প্রদান করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
Tags
রাজনীতি