আব্দুর রাজ্জাক শেখ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হন ২০০৫ সালে। তবে এর চার বছর আগেই ২০০১ সালে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় এএসপি হন তার ছেলে শেখ রফিকুল ইসলাম শিমুল। তারপর যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়ে যান তিনি।
বর্তমানে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে থাকা রফিকুল ইসলাম গত দুই যুগে অবৈধভাবে অর্জন করেছেন শত শত কোটি টাকার সম্পদ। পুলিশ বাহিনীতে যোগদানের পর প্রভাব খাটিয়ে শুধু নিজের নয়, সম্পদ গড়েছেন ভাই, ভাগ্নে, স্ত্রী, শ্বশুরসহ স্ত্রীর পক্ষের আত্মীয়স্বজনের নামে। দেশের বাইরে স্বর্ণের ব্যবসাসহ রয়েছে অন্তত তিনটি জাহাজ।
অবশেষে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার সম্পদ জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০১ সালের ৩১ মে ২০তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় এএসপি হিসেবে যোগ দেন রফিকুল ইসলাম। সে সময় রফিকুল ইসলামের বিসিএসে হাতে লেখা আবেদনপত্র এসেছে কালবেলার হাতে। আবেদনপত্রে নিজের নাম লিখেছেন শেখ রফিকুল ইসলাম, বাবার নাম মৃত আব্দুর রাজ্জাক শেখ। আবেদনপত্রে রফিকুল নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে দাবি করেছেন। রোল নম্বর: ০১৭২৫৫এম-১২৯৮৩।
রফিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত দলিল লেখক ও ভাগ্নে উজ্জ্বল মামুন চৌধুরীর নামে শুধু গোপালগঞ্জেই ৭ একরের ওপরে জমি রয়েছে। গোপালগঞ্জের নবিনবাগে মহিলা মাদ্রাসা রোডে ৩ তলা একটি বাড়ি রয়েছে। রফিকুলের বোন ফেরদৌসী বেগমের নামে অগ্রণী ব্যাংক ঢাকার গ্রিন রোড শাখায় ১০ কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে, যার হিসাব নম্বর ৩০৩৯২৯০০২৩/২০১৭। ভাই মাহফুজুর রহমানের নামে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ২৭নং বিজয়পাশা মৌজায় একটি মার্কেট রয়েছে, যার দাগ নং ৩২৬, যার নাম কানাডা সুপার মার্কেট।
জানতে চাইলে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, ‘অতিরিক্ত ডিআইজি রফিকুল ইসলামের নামে দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে শত শত কোটি টাকার সম্পদের প্রমাণ মিলেছে, যা তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত। আমরা সেসব সম্পদ তালিকাভুক্ত করে আদালতে জব্দের আবেদন করেছি। আদালত আমাদের আবেদন মঞ্জুর করে জব্দের আদেশ দিয়েছেন।’