"

মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি অস্বাভাবিক নয়: গভর্নর


বর্তমান মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিকে সাময়িক বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ে এক সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন। 

গভর্নর বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, তবে এটা অস্বাভাবিক না। বৈশ্বিকভাবে প্রবণতা এমনই। বাংলাদেশে বেড়েছে বন্যা, মজুরি বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতির ভিত্তিকে নিয়ন্ত্রণ না করা ইত্যাদি কারণে। তবে এটা সাময়িক।’

আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি ও পণ্যের মূল্যকে এক করে দেখা যাবে না। কিছু ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি কমলেও পণ্যের মূল্য বেড়েছে।’ 

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ তথ্যে জানা যায়, সেপ্টেম্বরের চেয়ে অক্টোবরে দেশের সার্বিক ও খাদ্য মূল্যস্ফীতি দুটোই বেড়েছে। সেপ্টেম্বরের এক অঙ্কের মূল্যস্ফীতি গত মাসে বেড়ে দুই অঙ্কে দাঁড়িয়েছে। 

এতে জানানো হয়, গত অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বরে এটি ছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ।

অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। বর্তমানে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বরে ছিল ১০ দশমিক ০৪ শতাংশ। অবশ্য গত মাসে কিছুটা কমেছে খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি। 

এর আগে, গত জুলাইয়ে দেশে জাতীয় পর্যায়ে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ওই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ হারে। 

২০২৩ সালের মার্চ থেকে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি নয় শতাংশের ওপরে আছে। যার প্রভাব পড়েছে স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষের ওপর।

দেশে চালের দাম বেশি থাকলেও তা অন্যন্য দেশের তুলনায় কম বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর। তিনি বলেন, ‘চালের দাম বেশি থাকলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় দাম কম আছে। এবং চালের বাজারে সরবরাহ পরিস্থিতি ভালো। চাল আমদানি করা নাও লাগতে পারে। সরকার চায় চালের দাম কমুক কিন্তু কৃষককে দাম দিতে হয়।’

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্য, জ্বালানির দাম তুলনামূলক স্থিতিশীল বলেও জানান তিনি। গভর্নর জানান, অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ক্ষেত্রে ঋণপত্রের খরচ যাতে না ধরা হয় তা নিশ্চিত করতে আগামী রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। 

আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘রমজানকে সামনে রেখে বাজারে রমজানের মৌলিক পণ্যের সরবরাহ যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সরকার সর্বোচ্চভাবে সে চেষ্টা করবে। যেকোনো দেশের ক্ষেত্রে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে হলেও ১২ থেকে ১৮ মাস লাগে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে।’

টিসিবির চালের বরাদ্দ পরিবারপ্রতি বাড়িয়ে ১০ কেজি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একইসঙ্গে ওএমএস এর চালের বরাদ্দও বাড়ানো হবে। বাজার মনিটরিং করা হবে কিন্তু মনিটরিং বাড়াবাড়ি পর্যায়ে নেওয়া হবে না। বাড়াবাড়ি করলে বাজারের স্বকীয়তা নষ্ট হবে।’

এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানান, ব্যাংকের তারল্য সংকট কাটতে শুরু করেছে। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি ১০ এ উঠেছে। এটার পেছনে বন্যাসহ নানা কারণ থাকতে পারে। চালের দাম সহনীয় আছে। কৃষকদের কথাও ভাবতে হবে।’

গভর্নর বলেন, ‘আন্তজার্তিক এনার্জি দাম, পন্যের দাম কমলে দেশে প্রভাব পড়বে। ১২ থেকে ১৮ মাস লাগবে অর্থনীতিতে স্টাবিলিটি আসতে। ধৈর্য্য ধরতে হবে।’ 



ব্যাংকগুলোতে ডলারের সংকট নেই জানিয়ে গভর্নর বলেন, ‘আপনি দেখেন ডলার পাবেন, ব্যাংকে যান। এখন টাকা ব্যাংকে না পেতে পারেন, ডলার পাবেন। ডলার কেউ না দিলে আমাকে বলবেন। ব্যবস্থা নেবো। বাজারে মনিটরিং করছি। অযৌক্তিকভাবে করলে হবে না।’ 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, ‘১/১১ সালে দেখেছি। ভয় দেখিয়ে নয়, স্বাভাবিকভাবে বুঝিয়ে। সাপ্লাই বাড়িয়ে করছি। স্বাভাবিক নিয়মে করছি। ফুটপাত মানুষের হাঁটার জায়গা ছেড়ে ব্যবসা করতে হবে। কমলা হারিস হারার কারণে দেশে দাম বাড়েনি, এখন যেটা ইনফ্লেশন হিসাব সেটা আগের।

গভর্নর বলেন, ‘দেশে সাধারণ বাজারমূল্য এমনিতেই বেশি। সে জায়গায় দাঁড়িয়ে বাকি কথাগুলো বলতে হবে। ধৈর্য্য ধরতে হবে।’

itvbd
Previous Post Next Post

Random Manga

Ads

نموذج الاتصال