"

এস আলমের বাড়ি এখন জৌলুসহীন

 

দোর্দণ্ড প্রতাপশালী এস আলমের বাড়ি এখন জৌলুসহীন। বন্ধ হয়ে গেছে চট্টগ্রামে ৫০ একর জমির ওপর শুরু হওয়া বিলাসবহুল বাংলো নির্মাণের কাজ। সরিয়ে নেয়া হয়েছে নামিদামি গাড়ি, এমনকি নিরাপত্তা কর্মীদের। ত্যাগ করেছেন নাগরিকত্ব। এ অবস্থায় তার দেশে থাকা সম্পদ দ্রুত জব্দ করে আইনি প্রক্রিয়া শুরুর পরামর্শ দিচ্ছেন দুদকের সাবেক কর্মকর্তা।


২০১৪ সালের নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা সরকারের অতি ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হয়ে ওঠেন এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম। যেন হাতে পেয়ে যান আলাদিনের চেরাগ।


টিন এজেন্ট হিসেবে যাত্রা শুরু হলেও পরিবহন, সিমেন্ট, ভোজ্য তেল, স্টিল, চিনি পরিশোধন থেকে শুরু করে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ ব্যবসায়ও আসে তারা। ২০২০ সালে চট্টগ্রামে ৫০ একর জমির ওপর শুরু হয় বিলাসবহুল বাংলো নির্মাণের কাজ। 


সেখানে হচ্ছিল ৭ ভাইয়ের জন্য ৭টি বাড়ি। এর মধ্যে এস আলমের নিজেরটি আবার ৪ তলা। প্রতিটি ফ্লোর ১৫ হাজার বর্গফুট। লেকের জন্যও রয়েছে নির্ধারিত জায়গা। আগস্টের শুরুতেও চলেছে কাজ।


স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘এখানে বাড়ি বানাচ্ছে। এস আলমের বাড়ি বানাচ্ছে। ওখানে ৭টা। আমরা এদিকের খোঁজখবর রাখি না।’ 


তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আনাগোনা নেই চট্টগ্রামের সুগন্ধা আবাসিকের বাড়িতেও। জৌলুস হারিয়েছে পটিয়ার বাড়ি। রাজধানীর বনানী ডিওএইচএসের এপার্টমেন্টে সাড়ে তিন হাজার স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট দুটি, গাড়িও পড়ে আছে পার্কিংয়ে, তবে খোঁজ নেই পরিবারের সদস্যদের।


ভবনটির একজন বাসিন্দা বলেন, ‘তাদের ফ্ল্যাট এখানে ২টা আছে। ৩ তলায়। এরা কেউই এখানে নাই। আগে অনেক মানুষ ভিড় করত। ৫ আগস্টের পর থেকে কোনো মানুষকে দেখতে পাচ্ছি না আমরা।’ 


এ অবস্থায় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অর্থ লোপাট ও পাচারে অভিযুক্ত এস আলমের দেশে থাকা সম্পদ দ্রুত জব্দ করে আইনি প্রক্রিয়া শুরুর পরামর্শ দিচ্ছেন দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মো. মইদুল ইসলাম। 


সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তারা যখন দোষী সাব্যস্ত হবে বিচারে এবং তাদেরকে সাজা দেওয়া হবে তখন এই সম্পদগুলো বাজেয়াপ্ত হবে সরকারের অনুকূলে। তখন সরকার এই সম্পদগুলোকে নিতে পারবে এবং সরকার সে অনুযায়ী ডেস্পোজাল করতে পারবে অর্থাৎ বিক্রি করতে পারবে বা দান করতে পারবে। মানে পুরোপুরি সরকারি সম্পত্তি হয়ে যাবে।’


এক দশকে ইসলামী ব্যাংকসহ ডজন খানেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ২ লাখ কোটি টাকা নেয়ায় অভিযুক্ত এস আলম গ্রুপ। সে সম্পদে নানা দেশে, নানা নামে গড়েছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও। নিজেকে সিঙ্গাপুরের নাগরিক বলে ছেড়েছেন বাংলাদেশের নাগরিকত্বও।

Previous Post Next Post

Random Manga

Ads

نموذج الاتصال