ক্ষ্যাপাটে, অপ্রতিরোধ্য, পাগলা ঘোড়া, আনপ্রেডিকটেবলসহ নানা উপাধি পেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার সম্ভবত তিনি ‘প্রতিশোধপরায়ণ’ উপাধিটিও পেতে চলেছেন। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের সাংবাদিক স্টিফেন কলিনসন বলেছেন, ‘ট্রাম্প ‘‘প্রতিশোধ’’ শব্দটিকে খাবারের মতো উপভোগ করেন এবং এটিকে তিনি গরম গরম খেতে পছন্দ করেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডগুলো দেখলে অবশ্য স্টিফেন কলিনসনের কথাই সত্য বলে মনে হবে। তিনি তাঁর প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করতে একটুও সময় নষ্ট করছেন না।
গত সোমবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বাইডেনের শাসনামলে বিচার বিভাগের যেসব কর্মকর্তা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘অপরাধ’ তদন্ত করেছিলেন, তাঁদের সবাইকেই চাকরিচ্যুত করেছেন ট্রাম্প।
একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ৬০ জন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকেও ট্রাম্প ছুটিতে পাঠিয়েছেন বলে খবর প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, পরিবহন, ভেটেরানস অ্যাফেয়ার্স, গৃহায়ণ ও নগর উন্নয়ন, স্বরাষ্ট্র এবং জ্বালানি বিভাগসহ আরও কয়েকটি দপ্তরের ১৭ জন স্বাধীন মহাপরিদর্শককে (স্বাধীন পর্যবেক্ষক) বরখাস্ত করেন ট্রাম্প। এদের মধ্যে গোয়েন্দা সংস্থার একজন মহাপরিদর্শক রয়েছেন, যার কারণে প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকার সময়ে ট্রাম্প অভিশংসনের মুখে পড়েছিলেন।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনসহ আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সাবেক কর্মকর্তার নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। বুঝতে অসুবিধা হয় না, এদের প্রত্যেকের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন ট্রাম্প।
এ ছাড়া ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগে যারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন এবং কারারুদ্ধ হয়েছিলেন, তাদের সবাইকেই অব্যাহতি দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্পের এসব কর্মকাণ্ড একটিই ইঙ্গিত দেয়, সেটি হচ্ছে–তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করা থেকে সাবধান হতে হবে। কিন্তু ট্রাম্পের কাজগুলো আইনসম্মত কিংবা নীতিগতভাবে সঠিক কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়।
পদক্ষেপগুলো পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায়, ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। কারণ, প্রথম মেয়াদে প্রশাসনের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল না ট্রাম্পের। তাঁর অনেক পদক্ষেপে বাধা দিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা। এবার সম্ভবত সেই ভুল আর ট্রাম্প করতে চাচ্ছেন না। শুরুতেই পুরো প্রশাসন নিজের মুঠোর ভেতর নিতে চাচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
ট্রাম্পের মতো অসংখ্য রিপাবলিকান মনে করেন, মার্কিন আমলাতন্ত্র ডানপন্থী নীতিগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। অথচ মার্কিন জনগণ ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলেন ডানপন্থী নীতিগুলোতে প্রতিষ্ঠা করার জন্য।
দ্বিতীয় মেয়াদেও ডানপন্থী নীতিগুলোকে বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতায় এসেছেন ট্রাম্প। সুতরাং ভোটারদের সেই প্রত্যাশা পূরণ করার দায় রয়েছে ট্রাম্পের।
গত চার বছর বাইডেনের শাসনামলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যত ফৌজদারি মামলা হয়েছে, সেগুলো রাজনৈতিক নিপীড়ন ছাড়া অন্য কিছু নয় বলে মনে করেন রিপাবলিকানরা। এ ছাড়া বহু সাধারণ মার্কিনিও মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের পুরো বিচারব্যবস্থা দুর্নীতিগ্রস্ত ও পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে পড়েছে। বিচারব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো দরকার।
কিন্তু ‘ঢেলে সাজাতে’ গিয়ে ট্রাম্প যা করছেন, তা ‘জবাবদিহি রোধে’ অসাধারণ উদাহরণ হয়ে থাকবে। এ প্রসঙ্গে ১৯৯৩ সালের একটি ঘটনা স্মরণ করা যায়। তখন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি ছিলেন হিলারি ক্লিনটন। ওই সময়ে হোয়াইট হাউসের ট্রাভেল অফিসের ৭ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল এবং ওই বরখাস্তের পেছনে ফার্স্ট লেডি হিলারির ভূমিকা ছিল বলে পরে অভিযোগ ওঠে। এফবিআই ওই ঘটনায় তদন্ত শুরু করলেও বিল ক্লিনটনের মেয়াদের শেষ বছরে তদন্তটি হিলারির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছাড়াই শেষ হয়।
প্রেসিডেন্টরা ম্যান্ডেট পেতে পারেন, কিন্তু এটি তাদের আইন ভঙ্গ করার বৈধতা দেয় না। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইনে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, মহাপরিদর্শকদের বরখাস্ত করার অন্তত ৩০ দিন আগে কংগ্রেসকে অবহিত করতে হবে। কিন্তু ট্রাম্প এসব আইনের তোয়াক্কা করেননি। তিনি পত্রপাঠ ১৭ মহাপরিদর্শককে বিদায় করেছেন।
রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া বিচারকদের অপসারণের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে অবশ্য নতুন নয়। এর আগেও অনেক প্রেসিডেন্ট এই কাজ করেছেন। তবে বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের আইনি সুরক্ষা থাকা উচিত। এটি যে উচিত, তা ট্রাম্পের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের পর খোদ রিপাবলিকান সিনেটরদের ‘উদ্বেগ প্রকাশ’ থেকেই বোঝা যায়। একজন সাবেক রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান কেন বাক সিএনএনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করার ঘটনাটি অবশ্যই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ভুল।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
ট্রাম্প যে প্রতিশোধমূলকভাবে তাঁদের বরখাস্ত করেছেন, সেটি ট্রাম্পের প্রশাসন গোপনও করছে না। বরং খোলাখুলিভাবেই বলেছে, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনায় আপনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এ কারণে প্রেসিডেন্টের এজেন্ডা বাস্তবায়নে আপনার ওপর আস্থা রাখা যায় না।’ যাঁদের বরখাস্ত করা হয়েছে, তাদের কাছে পাঠানো চিঠিতে এই কথাগুলো লিখেছেন ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল জেমস ম্যাকহেনরি। শুনতে হয়তো বিস্ময়কর শোনাচ্ছে, কিন্তু এটিই এখন ঘটছে। আরও বিস্ময়কর, চাকরিচ্যুত হওয়া এসব কর্মকর্তাদের কারও বিরুদ্ধেই ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ নেই।
সাবেক আইনজীবী জেনিফার রজার্স বলেন, ‘ফৌজদারি জগতে প্রেসিডেন্টের কোনো এজেন্ডা থাকা উচিত নয়। আইনকে আইনের মতো চলতে দেওয়া উচিত।’
কিন্তু ট্রাম্প আইনকে আইনের মতো চলতে দেবেন বলে মনে হয় না। তিনি তাঁর নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করে যা খুশি তাই করবেন এবং এ ব্যাপারে কেউ যেন বাধা না দেয়, সেই বার্তা ও ভয়ভীতিই দেখাতে চাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তাদের। তিনি স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে, কেউ যদি তাঁর বিরুদ্ধে যায়, তার পরিণতিও হবে পম্পেও বা বোল্টনের মতো।
ট্রাম্পের এসব পদক্ষেপে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তাঁদের শেষ আশ্রয় আদালত ও কংগ্রেস। কিন্তু তাঁরা কেউই এই সময়ে সুবিচার পাবেন বলে বিশ্বাস করেন না।
এ ছাড়া ট্রাম্প নির্বিচারে অভিবাসীদের গ্রেপ্তার করছেন। এ পর্যন্ত ৯৫৬ জন অভিবাসীকে গ্রেপ্তারের খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। বহু অভিবাসীকে সামরিক উড়োজাহাজে তুলে খুব আমানবিকভাবে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। কয়েকদিন আগে ব্রাজিলে একদল অভিবাসী পাঠানো হয়েছে হাতকড়া পরা অবস্থায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ব্রাজিলের মিনাস গেরাইস বিমানবন্দরে অবতরণ করা একটি উড়োজাহাজ থেকে সার বেঁধে অভিবাসীরা নেমে আসছে, যাদের প্রত্যেকের হাতে হাতকড়া। এ ঘটনায় ব্রাজিল ভীষণ চটেছে। ব্রাজিল সরকার বলেছে, শরণার্থীদের সঙ্গে কখনোই অপরাধীদের মতো আচরণ করা যায় না। যুক্তরাষ্ট্রর প্রশাসনের এই বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত।
কলম্বিয়াতেও অভিবাসী বহনকারী একটি সামরিক উড়োজাহাজ পাঠিয়েছিলেন ট্রাম্প এবং এ ঘটনাতেও ক্ষুব্ধ হয়েছিল কলম্বিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো তাদের বিমানবন্দরে উড়োজাহাজটি অবতরণের অনুমতি দেননি। পরে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ নানা হুমকি‑ধমকির পর পেট্রো অবশ্য উড়োজাহাজ অবতরণের অনুমতি দেন।
ক্ষমতায় বসার পরই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে বের হয়ে যাওয়ার মতো হঠকারী ঘোষণাও দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘চীনের জনসংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক বেশি, অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই বেশি টাকা দাবি করে। এটা চলতে পারে না। আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় তহবিল বন্ধ করছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
ডব্লিউএইচও-তে কর্মরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদেরও ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। এ ছাড়া করোনা মহামারি মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ব্যর্থতা, বিভিন্ন সদস্য দেশের রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অপারগতা, সংস্কারে অনিচ্ছাসহ এন্তার অভিযোগ তাঁর।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, মহামারিবিষয়ক চুক্তির আলোচনা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া। মহামারি মোকাবিলায় যাতে সব দেশের মধ্যে একটি সংহতি থাকে, যাতে টিকা, ওষুধ ইত্যাদি সুষমভাবে বণ্টন করা যায়, সেই উদ্দেশ্যে চুক্তিটি করার উদ্যোগ নিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কিন্তু ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোনো চুক্তি মানবেন না। ফলে এই চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়েই এখন সংশয় দেখা দিয়েছে।
আমেরিকা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ডব্লিউএইচওর কোনো চুক্তির শর্ত মানতে তারা বাধ্য নয়। এর পরে এই চুক্তি কতটা অর্থপূর্ণ হবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে।
এটা সত্য যে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, দক্ষতার অভাব, সংস্কারের অভাবসহ নানা সমস্যা রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। কিন্তু সারা বিশ্ব থেকে চিকেন পক্স ও পোলিওর মতো রোগ নির্মূল করার মতো কিছু ভালো কাজও তো রয়েছে এই সংস্থার।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের কী কী ক্ষতি হতে পারে, সেটিও ট্রাম্পের বিবেচনা করা উচিত। বিশ্বের সংক্রামক রোগের যে বিপুল তথ্যভাণ্ডার রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার, সেটি থেকে বঞ্চিত হবে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রকে ‘গ্রেট’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন ট্রাম্প। তিনি স্লোগান তুলেছেন–‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’, অর্থাৎ আমেরিকাকে আবার মহান করো। কিন্তু অসংখ্য অভিবাসীর অভিশাপের ওপর দাঁড়িয়ে, বিচার বিভাগকে কুক্ষিগত করে, চারপাশে প্রতিশোধের আগুন ছড়িয়ে কি আমেরিকাকে মহান করা সম্ভব? এভাবে কি গ্রেট হওয়া যাবে, প্রিয় ট্রাম্প?
লেখক: সহসম্পাদক, ডিজিটাল বিভাগ, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন
[এই মতামত লেখকের নিজস্ব। এর সঙ্গে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রাতিষ্ঠানিক সম্পাদকীয় নীতিমালার কোনো সম্পর্ক নেই।]
Tags
আন্তর্জাতিক