"

৬, ৪, ৪, ৬, ৪, ৬ – শেষ ৬ বলেই তামিমদের স্তব্ধ করে দিলেন নুরুল


জয়ের জন্য ১২ বলে ৩৯ রান প্রয়োজন ছিল রংপুর রাইডার্সের। তখন মনে হচ্ছিল, তারা হেরেই যাবে। তখনই (অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড) বিতর্কিত এক আউট দেন টিভি আম্পায়ার। রান নিতে গিয়ে ফিল্ডারকে বাধা দিয়েছেন নন স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে দৌড়ানো নুরুল হাসান সোহান, কিন্তু আম্পায়ার ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ডে’র কারণে আউট দিলেন শেখ মেহেদীকে! ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল এর কিছুক্ষণ আগেই পিঠে চোট পাওয়ায় মাঠের বাইরে ছিলেন, তাঁর বদলে অধিনায়কত্ব করতে থাকা মুশফিকুর রহিম আম্পায়ারের সঙ্গে কিছুক্ষণ তর্ক করলেন এ নিয়ে।

সেই নুরুল হাসান সোহানই যে তামিম-মুশফিকদের এভাবে ভোগাবেন, তখন কে জানত!

রংপুর ইনিংসের শেষ কয়েকবার ওভারে বারবার বদল দেখা ম্যাচে শেষ ওভারে রংপুরের দরকার পড়ল ২৬ রান, ক্রিজে নুরুল হাসান সোহান। জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই উইকেটকিপার সিলেটে এর পর যা করলেন, তা রীতিমতো চোখধাঁধানো! কাইল মায়ার্স করা শেষ ওভারের ৬ বলে ৬টি বলই বাউন্ডারিছাড়া করলেন সোহান! প্রথম বলে ছক্কার পরের দুই বলে দুটি চার, তার পরের বলে আবার ছক্কা, পঞ্চম বলে চার!


শেষ বলে রংপুরের দরকার পড়ল ২ রান, সোহান আবার ছক্কাই মেরে দিলেন! মায়ার্স কী বুঝে কী বোলিং করতে চাইলেন, সে উত্তর ম্যাচ শেষে তামিমও তাঁর কাছে বোধ হয় জানতে চেয়েছেন, তবে তা নিয়ে সোহানের ভাবতে বয়েই গেছে! অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে রংপুরকে ৩ উইকেটের জয় এনে দিয়ে সোহান যে তখন ব্যাট বনবন করে ঘুরিয়ে নাচতে ব্যস্ত!

বিপিএলের ইতিহাসে এর আগে কখনো শেষ ওভারে ছয় বলে ছয় বাউন্ডারি মেরে কোনো দল ম্যাচ জিততে পারেনি। অবিশ্বাস এক রেকর্ড গড়ে তামিম ইকবালের বরিশালকে চলতি টুর্নামেন্টে দ্বিতীয়বার হারাল রংপুর। সেই সঙ্গে টানা ছয় ম্যাচে অপরাজিত থেকে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে নিজেদের স্থান আরও শক্ত করল রাইডার্স।


১৯৮ রানের পাহাড় সমান লক্ষ্যে নেমে শুরুতেই আলেক্স হেলসকে হারিয়ে চাপে পড়ে রংপুর। পাওয়ার প্লে-তে শাহিন আফ্রিদিদের সামলে কেবল ৩৪ রান তুলে রাইডার্স। মাঝ ওভারে ফর্মে থাকা সাইফ হাসান ও ওপেনার তৌফিক খানকে দলীয় ৬৬ রানের মধ্যেই হারিয়ে ম্যাচ থেকে এক প্রকার ছিটকে যায় টুর্নামেন্টে অপরাজিত থাকা দলটি।

কিন্তু চতুর্থ উইকেটে খুশদিল শাহ ও ইফতিখার আহমেদের ৫৩ বলে ৯১ রানের জুটিতে ম্যাচে ফেরার আভাস দেয় রংপুর। কিন্তু তখনও দুই ওভারে ৩৯ রান প্রয়োজন জয়ের জন্য। ১৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে দুই ছক্কা মেরে খুশদিল শাহ ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন। তবে বরিশালের জাহানদাদ খান তৃতীয় বলেই খুশদিলকে প্যাভিলিয়নে ফেরান।


চতুর্থ বলে ওই অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড কান্ড। নুরুল হাসান সোহান রান নিতে গিয়ে ফিল্ডারকে বাধা দেন। সেই বাধা দেওয়ার কারণে আম্পায়ার স্ট্রাইকে থাকা শেখ মেহেদিকে অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড আউট দিয়ে বিতর্কের তৈরি করেন। তবে সব বিতর্কে অবসান ঘটিয়ে শেষ ওভারে তিন চার ও ৩ ছয়ে ম্যাচ নিজ দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন সোহান (৭ বলে ৩২ রান*)।

এর আগে কাইল মায়ার্সের ২৯ বলে ৬১ রান ও তামিম-শান্তর চল্লিশোর্ধ্ব ইনিংসে ১৯৭ রানের সংগ্রহ পায় ফরচুন বরিশাল। ৫ ম্যাচে ৩ জয় নিয়ে বরিশাল দুই নম্বরে অবস্থান করছে। আর ৬ ম্যাচে ৬ জয় নিয়ে সবার শীর্ষে রংপুর।
Previous Post Next Post

Random Manga

Ads

نموذج الاتصال