মাদারীপুরের শিবচরে সালিসে ধর্ষণের ন্যায় বিচার না পেয়ে সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ১০ জনের নামে থানায় মামলা করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। পুলিশ বলছে, অপরাধীদের ধরতে চলছে অভিযান।
মৃত হাফিজা আক্তার (১৪) উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বাবলাতলা কাইমুদ্দিন শিকদারের কান্দি গ্রামের চাঁনমিয়া মোল্লার মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাফিজা আক্তারের সঙ্গে প্রেম ছিল প্রতিবেশী আবুল কালাম সরদারের বড় ছেলে পিয়ার সরদারের (২০)। সম্পর্কের এক পর্যায়ে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে পিয়ার সরদারের আশ্বাসে ওই শিক্ষার্থীর গর্ভপাত করানো হয়। এ নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে স্থানীয়ভাবে সম্প্রতি সালিস-বৈঠক হয়। এতে দত্তপাড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোতাহার হোসেন, উজ্জল খান, তাজেল মাদবর, জাহাঙ্গীর খাঁসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্ত পিয়ার ইতালি যাবার প্রস্তুতি নেওয়ার কারণে তাঁর ছোট ভাইয়ের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সালিসকারীরা। বিয়ে না করলে ১০ লাখ টাকা জরিমানার শাস্তি ধার্য করা হয়। এ সিদ্ধান্তর পরই সালিস বৈঠকেই দুই পক্ষের হট্টগোল শুরু হয়। পরে সেখান থেকে চলে যান সালিসকারীরা। এ ঘটনায় স্কুলশিক্ষার্থী ধর্ষণের ন্যায় বিচার না পাওয়ায় অপমানে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করে।
ভুক্তভোগীর মা নাছিমা বেগম বলেন,‘আমাদের গ্রামের মাদবররা কী বিচার দিল? আমি আমার মেয়েকে হারানোর ঘটনায় বিচার চাই।’
সালিসকারী উজ্জ্বল খান বললেন, ‘সালিশ করতে গিয়ে আমরা জেনেছি, মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিল। তাই আমরা মেয়েটিকে বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে আর রাজি হননি।
এ ঘটনায় মেয়েটির বড় ভাই নাসির মোল্লা বাদী হয়ে শিবচর থানায় প্রধান সালিসকারী ইউপি সদস্য ও অভিযুক্ত পিয়ারসহ ১০ জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আকতার হোসেন বলেন, ‘ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত পিয়ার হোসেন। মামলার অন্য আসামিদেরও আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে জেলা সদর হাসপাতালে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।’
Tags
সারাদেশ