কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে এক বাংলাদেশি পরিবারের বাড়ি নির্মাণ নিয়ে আপত্তি তুলেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। তাদের আপত্তিতে জমির মালিক মিলন মিয়া ও তাঁর ভাই দুলাল হোসেন বাড়ির নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। তারা বলছেন, ওই বাড়ি ছাড়া তাদের থাকার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এ অবস্থায় শীতের মধ্যে পরিবার নিয়ে দু’জনই চরম বিপাকে পড়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের উত্তর অনন্তপুর বড়াইয়েরতল সীমান্তে।
অনন্তপুর বিজিবির ল্যান্সনায়েক মুরাদ হোসেন জানান, মিলন মিয়া ও দুলাল হোসেন ৫ শতাংশ জমির ওপর তৈরি টিনশেড ঘরে পরিবার নিয়ে থাকতেন। তারা ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। সম্প্রতি গ্রামে এসে নতুন করে ইট দিয়ে ঘরের কাজ করার জন্য প্রস্তুতি নেন। ইটের গাঁথুনি শেষ হওয়ার পর বিএসএফ খবর পেয়ে বাধা দেয়। তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক সীমান্তের ৯৪৬ নম্বর মেইন পিলারের সাব-পিলার ২-এর অভ্যন্তরে ৭০ গজ অদূরে ওই বাড়ির নির্মাণকাজ চলছে। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জমির মালিককে বাড়ির কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
এদিকে অর্ধেক নির্মাণ করে বাড়ির কাজ বন্ধ রাখায় বিপদে পড়েছেন মিলন মিয়া ও দুলাল হোসেনের পরিবার। থাকার অন্য ব্যবস্থা না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। বাড়ির আঙিনায় ভাঙাচোরা টিনের টংঘর তুলে কষ্টে দিন কাটছে তাদের।
মিলন মিয়ার স্ত্রী সালমা বেগম জানান, মাত্র ৫ শতাংশ জমির ওপর তাদের আগের টিনশেড বাড়ি ছিল। তাই পুরোনো ঘর ভেঙে ইটের ঘর বানানো হচ্ছিল। এর মধ্যে বিএসএফ বাধা দেওয়ায় কাজ বন্ধ করে রাখতে হয়েছে। কিন্তু আগেই পুরোনো ঘর ভেঙে ফেলায় এখন কীভাবে বাস করব, বুঝতে পারছি না।
কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মানিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিএসএফ ঘর নির্মাণে বাধা দেওয়ায় আপাতত নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে।
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি অনন্তপুর বিওপির নায়েক সুবেদার সফিকুল ইসলাম জানান, ভারতের ১৩৮ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ঝিগরী ক্যাম্পের সদস্যরা বাড়িটি নির্মাণে বাধা দিয়েছেন। আমরা বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাড়ি নির্মাণ বন্ধ থাকবে।