গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরুর পর নিজ নিজ এলাকায় ফিরছেন লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি। গত সোমবার থেকে ৩ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ উত্তর গাজায় ফিরেছেন। এ অবস্থায় তাদের জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানা যায়, ১৫ মাস পর উত্তর গাজায় ফিরেছেন ৩ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। কিন্তু সেখানে খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ত্রাণ সংস্থা যে পরিমাণ ত্রাণ সরবরাহ করছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য।
উত্তর গাজায় ফিরে আসাদের মধ্যে কয়েকজন জানান, খাবার আনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে। এত সংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষ একসঙ্গে ফিরে আসায় এখানে সংকট তৈরি হয়েছে। এক টুকরো রুটি পেতেও খুব বেগ পেতে হচ্ছে তাদের।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনের কারণে উত্তর গাজার বাসিন্দাদের বড় একটি অংশ এতদিন উপত্যকার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অবশেষে ৪৭০ দিন পর তারা নিজেদের ঘরবাড়িতে ফিরে আসছেন। ফিরে আসা এসব মানুষ ধ্বংসস্তূপ ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পাচ্ছেন না। তবে উত্তর গাজায় ফিরে স্বজনদের খুঁজে পেয়ে আনন্দিত ও আপ্লুত বাসিন্দারা।
স্বজনদের খুঁজে পেয়ে আপ্লুত কয়েকজন ফিলিস্তিনি। ছবি: রয়টার্স গত সোমবার সকালে সামরিক অঞ্চল নেতজারিম করিডোর গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেয় ইসরায়েলি বাহিনী। এর দুই ঘণ্টা পর পায়ে হেঁটে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। প্রবেশ পথ খুলে দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিন লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ পায়ে হেঁটে উত্তর গাজায় ফেরেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৭ হাজার ৩০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে এক লাখ ১১ হাজারের বেশি মানুষ। ইসরায়েলের হামলা থেকে বাদ যায়নি উপত্যকার স্কুল, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি শরণার্থী শিবিরও। গত ১৫ মাসের হামলায় ৮০ হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।