গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানা থেকে হত্যা মামলার এক আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করে জেলা পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হৃদয় শেখ (২৫) নামের হত্যা মামলার এক আসামি হাত কড়া পরা অবস্থায় থানা থেকে পালিয়ে যায়। ওই আসামি মুকসুদপুর পৌরসভার কমলাপুর গ্রামের মৃত হেমায়েত শেখের ছেলে।
বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- এসআই শামীম আল মামুন ও কনস্টেবল মো. মাহফুজ। মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
থানা থেকে আসামি পালানোর বিষয়টি গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর জানাজানি হয়। এরপর মুকসুদপুর থানার ওসি রাত ১০টায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করেন। এর আগে তথ্য দিতে গড়িমসি করেন।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ মার্চ তারিখের কোনো এক সময় আকাশ মাতুব্বর নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের শিকার আকাশ মাতুব্বর ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার দামদরদি গ্রামের শাহা আলম মাতুব্বরের ছেলে। এ ঘটনায় গত বছরের ৮ মার্চ দায়েরকৃত মামলায় হৃদয় শেখকে দুই নম্বর আসামি করেন বাদী। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১১টার দিকে হৃদয় শেখকে গ্রেপ্তার করে মুকসুদপুর থানা-পুলিশ। পরে তাঁকে থানা হাজতে রাখা হয়। সেখান থেকে তিনি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পালিয়ে যান।
নিহত আকাশ মাতুব্বরের বাবা ও মামলার বাদী শাহা আলম মাতুব্বর বলেন, ‘আমার ছেলেকে হত্যা করে পুকুরে লাশ ফেলে রাখে হত্যাকারীরা। গত ৭ মার্চ মুকসুদপুর উপজেলার মাহারাজপুর ইউনিয়নের দুয়ারিডাঙ্গা গ্রামের একটি পুকুরের কচুরিপানার নীচ থেকে আমার ছেলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পলাতক হৃদয় এ হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আমি গত রাতে হৃদয়ের খোঁজ নিয়ে পুলিশকে জানালে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। সকালে থানা থেকে কী করে এই আসামি পালায়? এ সময় ডিউটি অফিসার ছিলেন এএসআই রেজভী খানম।’
মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আকাশ মাতুব্বর হত্যা মামলায় হৃদয় শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কিন্তু সকালে থানা থেকে সে পালিয়ে গেছে। তাকে পুনরায় গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে দায়িত্ব পালনকারী দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করে জেলা পুলিশ লাইন্স এ ক্লোজ করা হয়েছে। এছাড়া মুকসুদপুর ও কাশিয়ানী অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) মো. কামরুজ্জামানকে তদন্ত করে রির্পোট দিতে বলা হয়েছে। রির্পোট পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
Tags
সারাদেশ