"

বিতর্ক উস্কে দিতে পারে পিনাকী ভট্টাচার্যের ফুলকুমারী?

 


পিনাকি ভট্টাচার্য বাংলা ভাষাভাষী বিশ্বব্যাপী পরিচিত একজন ব্যক্তিত্ব। তার সমাজ, ইতিহাস, এবং দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে আলোচনার ঝড় তুলেছেন। তার সর্বশেষ রচনা "ফুলকুমারী" বইটি লিখিত হয়েছে ফ্রান্সে শরণার্থী জীবনের একাকিত্ব এবং কোভিডকালের বাস্তবতায়। এটি ইংরেজি ভাষায় রচিত এবং মূলত পশ্চিমের পাঠকদের জন্য।

লেখক একাকিত্বের মধ্যে থেকে শুরু করেছিলেন এই বইয়ের লেখনী। "ফুলকুমারী" একটি দার্শনিক অনুসন্ধান, যেখানে বাংলাদেশ এবং তার মানুষের ইতিহাস, সংস্কৃতি, এবং দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়েছে। বইটি ২০২১ সালে লেখার শুরু হয় এবং ২০২৪ সালে সম্পূর্ণ সম্পাদিত হয়। এটি কেবল ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার প্রকাশ নয়, বরং বাংলাদেশের ইতিহাস এবং বর্তমান সমাজের প্রতি লেখকের গভীর অনুসন্ধান।

Tourism guides

এ বিষয়ে পিনাকি ভট্টাচার্য বলেন, ‘যেই যুদ্ধের ফলে মুক্তি আসেনি, সেটাকে মুক্তিযুদ্ধ বলা যায় না। আমাদের যদি মুক্তি সত্যি আসতো, বাংলাদেশের মানুষ তো মুক্ত ছিল না এটা তো আমরা জানি। আমি যখন বইটা লিখছি তখন কিন্তু এটা আমার মাথায় ছিল। তাহলে তার সেটা না হলে তো ২৪-এর আন্দোলনের প্রয়োজন হতো না, গণঅভুত্থানেরও প্রয়োজন হতো না, বাংলাদেশের মানুষ যদি মুক্ত থাকতো। এখনো বাংলাদেশের মানুষ কি মুক্ত? না, আমাদের তো মুক্তি ঘটেনি।’ 

তার মতে, বাংলাদেশের মানুষ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং মানসিক মুক্তির অভাবে ভুগছে। এই বিতর্কিত বক্তব্য নিঃসন্দেহে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে।

বইটির মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্ব কীভাবে বাংলাদেশের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি থেকে শিক্ষা নিতে পারে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন লেখক। তিনি বলেন, ‘আমরা পশ্চিমকে কী দিতে পারি এবং পশ্চিম আমাদের কাছ থেকে কী নিতে পারে? এই দৃষ্টিভঙ্গি পশ্চিমা সমাজের প্রতি নতুন দার্শনিক দিকনির্দেশনা প্রদান করতে পারে।’


লেখকের মতে, দার্শনিক প্রশ্নগুলোর উত্তর কখনোই সবার জন্য একই হয় না। "ফুলকুমারী" বইটি পাঠকের সামনে এমন অনেক প্রশ্ন তুলে ধরে, যেগুলো বিতর্ক এবং আলাপ-আলোচনার সৃষ্টি করবে।

বইটি প্রকাশের পর প্রথম দিনেই এটি "ইন্ডিয়া হিস্ট্রি" এবং "সাউথ এশিয়ান হিস্ট্রি" ক্যাটাগরিতে বেস্ট সেলার হয়। প্যারিসের বিখ্যাত "শেক্সপিয়ার অ্যান্ড কোম্পানি" বইয়ের দোকানে বাংলাদেশি লেখকের বই হিসেবে স্থান পাওয়া, লেখকের জন্য গর্বের বিষয়।

Tourism guides

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্যারিসে একটা বিখ্যাত বইয়ের দোকান আছে। নাম হচ্ছে শেক্সপিয়ার এন্ড কোম্পানি এবং এই বইয়ের দোকানে আমি যেদিন প্রথম যাই আমি প্রথম খুঁজেছি যে আসলে বাংলাদেশি কোন লেখকের বই আছে কিনা। আমার খুব ইচ্ছা ছিল যে আমি একটা বাংলাদেশি লেখকের বই দেখব। আশ্চর্যজনকভাবে এটা এমন হলো যে ওইখানে যেই বইটা প্রথম স্থান পেতে যাচ্ছে সে বইটা আমারই হতে যাচ্ছে। এটা একটা অন্য ধরনের অনুভূতি।’

বাংলা ভাষায় "ফুলকুমারী"র অনুবাদ প্রক্রিয়া চলছে। তবে লেখক চান অনুবাদটি যেন তার ইংরেজি রচনার কাব্যময়তা বজায় রাখে। এ কারণে অনুবাদের কাজে সময় এবং মনোযোগ দিতে হচ্ছে।

"ফুলকুমারী" বইটি শুধুমাত্র একটি গল্প নয়; এটি দার্শনিক প্রশ্ন এবং সামাজিক বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করে লেখা। পিনাকি ভট্টাচার্য আশা করেন, এই বইটি বিতর্ক এবং আলাপ-আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত করবে এবং সমাজের চিন্তার গতিপথকে সমৃদ্ধ করবে।

তিনি বলেন, ‘বিতর্ক থাকাটা তো খারাপ কিছু না। মানে ধরেন আমার একটা মত নিয়ে বা আমার একটা অবস্থান নিয়ে যদি একটা বিতর্ক সৃষ্টি হয়, তার অর্থটা এটাই যে সমাজ এটাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। বিতর্ক তো খুবই স্বাস্থ্যকর একটা বিষয়। যে সমাজের অগ্রসর হওয়ার জন্য বিতর্ক একটা স্বাস্থ্যকর বিষয় আমি যেটা চিন্তা করছি বা আমি যেটা বলছি সেটা যে সবসময় সঠিক সর্বাংশে সঠিক হবে সেটা তো ঠিক না। আমার চিন্তার মধ্যে অনেক অসম্পূর্ণতা থাকতে পারে। আমার চিন্তার মধ্যে অনেক গ্যাপ থাকতে পারে। সেটাই কিন্তু বিতর্কের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে আসে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি খারাপ হলে আপনার কি ক্ষতি হয় কিছুই ক্ষতি হয় না। কারণ, আপনার সাথে আমার কোন ইকোনমিক এক্সচেঞ্জ নাই। আপনার সাথে আমি ব্যবসা-বাণিজ্য করছি না। আমি আপনি আমার প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন না অথবা আমি আপনার প্রতিষ্ঠানে যেয়ে চাকরি করছি না। অথবা আপনার সাথে আমি আত্মীয়তা করতে যাচ্ছি না যে আমি ব্যক্তিগতভাবে মানুষটা কেমন এটা ম্যাটার করে না।’

সূত্র: চ্যানেল আই। https://www.youtube.com/watch?v=qFVxesuoMNk


Previous Post Next Post

Random Manga

Ads

نموذج الاتصال