ইস্রায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ একটি গোপন অপারেশনে হিজবুল্লাহকে কয়েক হাজার বিস্ফোরক পেজার কিনতে এবং তা তাদের যোদ্ধাদের মধ্যে বিতরণ করতে বাধ্য করেছিল। এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ছিল হিজবুল্লাহর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেদ করা, যার ফলে অনেক সদস্য নিহত ও আহত হয়েছিল।
এই গল্পটি ২০২২ সালে শুরু হয়, যখন মোসাদ হিজবুল্লাহর নেটওয়ার্কে অনুপ্রবেশের জন্য পেজার ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছিল। এআর৯২৪ মডেলের পেজারটি ছিল দুর্দান্ত, জলরোধী এবং দীর্ঘ সময় ধরে চার্জ ছাড়াই চলতে সক্ষম। হিজবুল্লাহ তাদের যে পেজারগুলির প্রতি আস্থা রাখছিল, সেগুলি মোসাদই তৈরি করেছিল। এই পেজারগুলির ব্যাটারি প্যাকের মধ্যে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ছিল, যা মোসাদ দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারত।
২০২৩ সালের শুরুর দিকে, হিজবুল্লাহ এই পেজারগুলি কিনে এবং তা লেবানন ও সিরিয়ায় তাদের মাঝারি স্তরের যোদ্ধাদের মধ্যে বিতরণ করে। হিজবুল্লাহ ভেবেছিল যে এই পেজারগুলি ইসরায়েলের নজরদারি থেকে মুক্ত থাকবে, কিন্তু তারা জানত না যে এটি ছিল তাদের শত্রুদের পরিকল্পনা। একদিন পরে, ১৭ সেপ্টেম্বর, হাজার হাজার পেজার একযোগে বিস্ফোরিত হয়, এবং প্রায় ৩০০০ হিজবুল্লাহ যোদ্ধা, কর্মকর্তার এবং বেসামরিক নাগরিক নিহত বা আহত হয়।
এটি ছিল একটি অত্যন্ত সাহসী এবং সফল গুপ্তচরবৃত্তির কাজ, যা ইসরায়েলের নিরাপত্তা সংস্থার জন্য একটি বড় কৃতিত্ব হিসেবে গণ্য হয়। এর পরপরই ইসরায়েল হিজবুল্লাহর সামরিক অবকাঠামোর উপর আক্রমণ শুরু করে, তাদের নেটওয়ার্ক আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে এই অপারেশনটি অঞ্চলটিতে উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয় এবং হিজবুল্লাহ ও তাদের সমর্থকরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেয়।
এই ঘটনা ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে চলমান সংঘর্ষের একটি মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে, যা আধুনিক গুপ্তচরবৃত্তির ঝুঁকির এবং চ্যালেঞ্জের একটি স্পষ্ট উদাহরণ।
Tags
আন্তর্জাতিক