দেশের করিডোর দিয়ে মিয়ানমারে ত্রাণ পাঠানো গেলে রোহিঙ্গা প্রশ্নে জাতিসংঘের কাছ থেকে মিলতে পারে বাড়তি সুবিধা। তবে এক্ষেত্রে দেশটির পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখতে বলছেন বিশ্লেষকেরা। পাশাপাশি দিচ্ছেন ক্ষমতাধর দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর পরামর্শও।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। মিয়ানমারের আরাকানে ত্রাণ পাঠাতে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে মানবিক করিডোরের প্রস্তাব দেন তিনি।
সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, গত ৮ বছরে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সফল হয়নি বাংলাদেশ। এমন অবস্থায় জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রস্তাব বিবেচনা করা যেতেই পারে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘এখন এটা একটা নতুন এক্সপেরিমেন্ট হতে পারে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য। জাতিসংঘের মহাসচিব বিষয়টা আলোচনা করেছেন, আমার ধারণা এই উদ্যোগে যদি আমরা সহযোগী হতে পারি তাহলে জাতিসংঘের কাছ থেকে এ সমস্যা সমাধানে আরেকটু বাড়তি সুবিধা পাওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে। যদি সেটাকে আমরা কূটনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে পারি।’
তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষক শাফকাত মুনীর বলছেন, করিডোর কেন প্রয়োজন এবং নিরাপত্তা কে দেবে, সেসব আগে নিশ্চিত হতে হবে। ভূরাজনৈতিক দিকগুলোও পর্যালোচনা করতে হবে।
শাফকাত মুনীর বলেন, ‘আমি আবারও যেটা বলতে চাই যে, মিয়ানমারে বর্তমানে যেরকম একটা বিস্ফোরণ্মূখ পরিস্থিতি, যুদ্ধ পরিস্থিতি, অভ্যন্তরীণ সংঘাত, গৃহযুদ্ধ যেটাই আমরা বলি না কেন, সেরকম একটা পরিস্থিতিতে একটা হিউমেনিটারিয়ান করিডোর বা এ ধরনের যে আলোচনাগুলো এসেছে সেটাকে সার্বিকভাবে আমাদের বিবেচনা করতে হবে। এবং আমাদের দেখতে হবে এটা থেকে আমাদের জাতীয় স্বার্থ সম্পূর্ণভাবে রক্ষা হচ্ছে কি না। এবং দ্বিতীয়ত আমাদের মূল যেটা লক্ষ্য যে আমরা কি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে পারছি কি না।’
কিন্তু রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের ভূমিকার ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘গুরুত্ব দেওয়া দরকার যেসব দেশ আসলেই ক্ষমতা রাখে, এমনকি আমি যদি বলি যুক্তরাষ্ট্র ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে তারাই ক্ষমতা রাখে যদি আমাকে সমাধান করতে হয়। ঠিক একইভাবে চীনতো আছেই, আমি মনে করি ভারতও ভূমিকা রাখতে পারে। সেই দেশগুলো আরো গুরুত্বপূর্ণ এই সমাধানে। এমনকি এটাও মনে রাখতে হবে আমরা যদি যার ক্ষমতা নেই তার পেছনে ছুটি, তাহলে যাদের ক্ষমতা আছে তারা হয়ত পিছপা হয়ে যেতে পারে। তারা হয়ত বলবে যাক বাংলাদেশ যাচ্ছে জাতিসংঘ...আমরা তাহলে আর এ ব্যাপারে নজর দেবো না, তাও হতে পারে। আমি মনে করি যাদের ক্ষমতা আছে, তাদের সঙ্গে আরও প্রোঅ্যাক্টিভ ডিপ্লোমেসি চালানো দরকার।’
মানবিক করিডোর নিয়ে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মত নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা