২০২০ সালে বিদায় নিয়েছেন কিংবদন্তী দিয়েগো মারাদোনা। কিন্তু তাঁর মৃত্যু-রহস্যের এখনো সমাধান হয়নি। তাঁর চিকিৎসায় অপরাধমূলক অবহেলার অভিযোগে অভিযুক্ত সাতজন মেডিক্যাল প্রফেশনালের মামলায় মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার অভিযোগে গতকাল ২৬শে মার্চ মারাদোনার প্রাক্তন এক দেহরক্ষীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শপথ নিয়েও মিথ্যা বলেছিলেন- বিচারকের এমন রায়ের পর বুয়েনোস এইরেসের সান ইসিদ্রোর আদালত থেকে বের হওয়ার প্রাক্তন দেহরক্ষী হুলিও কোরিয়াকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি, যে পরিস্থিতিতে মারাদোনা মারা গিয়েছিলেন, তাতে অবহেলার ছাপ স্পষ্ট। এর আগে আদালতে উপস্থাপিত এভিডেন্সে বলা হয়েছিল কোরিয়া মুখে মুখ লাগিয়ে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ককে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছিলেন।
২০২০ সালের ২৫শে নভেম্বর ৬০ বছর বয়সে মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচারের পর পুনর্বাসন চলার সময় মারা যান মারাদোনা। তাঁর সাত সদস্যের মেডিকেল টিমের বিচার চলছে যারা প্রসিকিউটরদের ভাষায় মারাদোনার শেষ দিনগুলোকে ‘হরর থিয়েটার’ বানিয়ে ফেলেছিলেন।
মারাদোনার কন্যা জানা মারাদোনা আদালতকে বলেছেন, তিনি এবং তাঁর বোন জিয়ানিন্না মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগে তাদের বাবার সাথে দেখা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে তাঁর বাবার মেজাজ খারাপ ছিল এবং তার মনোবিজ্ঞানী- মামলায় বিবাদীদের একজন- পরামর্শ দিয়েছিলেন মারাদোনা নিজে অনুরোধ না করা পর্যন্ত তার পরিবারকে দেখা না করার জন্য।
জানা আরও জানিয়েছিলেন, দেখে মনে হচ্ছিল তাঁর বাবা ‘ফুলে উঠেছেন’ এবং অন্যান্য সাক্ষীরাও জানিয়েছেন ওই বাড়িতে কোনো চিকিৎসা সরঞ্জাম উপস্থিত ছিল না।
সান ইসিদ্রোর কাছে তিগ্রে শহরতলির সে বাড়িতে ডাক্তার পৌঁছানোর আগপর্যন্ত মারাদোনাকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছিলেন কোরিয়া। প্রাক্তন দেহরক্ষী আদালতে দাবি করেছিলেন যে তিনি মারাদোনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক (সাত আসামীর একজন) লিওপোলদো লুকের সাথে কথা বলেননি।
কিন্তু তদন্তকারী প্রমাণ পেয়েছেন মারাদোনার মৃত্যুর আগে ও পরে কোরিয়া এবং লুকের মধ্যে একাধিকবার মেসেজ আদান প্রদান হয়েছে।
সাতজন আসামীর বিরুদ্ধে ‘সম্ভাব্য ইচ্ছা নিয়ে নরহত্যার’ অভিযোগ আনা হয়েছে। যার অর্থ মারাদোনার মৃত্যুর কারণ হতে পারে তা জেনেও তারা কাজ চালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁদের আট থেকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া আগামী জুলাই পর্যন্ত চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় ১২০ জন সাক্ষী এই মামলায় সাক্ষ্য দেবেন।