আওয়ামী লীগের বিচার প্রক্রিয়া সঠিক পথে পরিচালনায় গুরুত্ব দিয়ে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেছেন, ‘বিচারের প্রক্রিয়া চলমান থাকলে দলটি এমনিতেই নিষিদ্ধ হয়ে যেতো।’ শুক্রবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর সদরে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আহসান উল্যাহর সভাপতিত্ব বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে মান্দারী উচ্চ বিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে এসব কথা বলেন তিনি।
শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে আলোচনা হচ্ছে যে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হলে একটি নিয়ম ও পরিকল্পনায় যেতে হবে। দেশ যেহেতু স্বাধীন। তাহলে একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা রয়েছে। সরকারের সহযোগিতায় শেখ হাসিনা, তার পরিবার ও দোসরদের বিচার প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হতে হবে।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ নাকি আওয়ামী লীগের বিচারটা গুরুত্বপূর্ণ– এই প্রশ্ন রেখে এ্যানি বলেন, ‘বিচারের প্রক্রিয়া যদি চলমান থাকতো অটোমেটিক আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়ে যায়। কে রোধ করতে পারতো? রোধ করার কোনো সুযোগ থাকতো না। অবিলম্বে বিচার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেন।’
শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী আরও বলেন, ‘হাসিনার পরিবারের বাইরে তার দোসর যারা মন্ত্রী-এমপি ছিল তারা সবাই লুটের সঙ্গে জড়িত ছিল। দুঃশাসন, গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল। রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। তাদের বিচারও এখনো দৃশ্যমান হয়নি। এ বিচারগুলো দৃশ্যমান হওয়া উচিত। আমরা বারবার বলছি হাসিনার বিচার, তার পরিবার ও দোসরদের বিচার আগে করতে হবে। পৌরসভা, থানায়, উপজেলায় ও জেলায় তাদের নেতৃত্ব দুঃশাসন তৈরি করেছিল। যারা অত্যাচার-নির্যাতন করেছে, তাদেরকে কি গ্রেপ্তার করা হয়েছে? তাদের বিচারও হয়নি। বিচার এখনো হচ্ছে না এতে আমাদের মনে কষ্ট।’
বিএনপির এই যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘বিচারের প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হয়ে গেলে তখন নির্বাচনের আলোচনা আসবে। সেই আলোকে একটি গোলটেবিল বৈঠক হবে সরকারের সঙ্গে। তখন সকল রাজনৈতিক দল বসে সেখানে একটি সমঝোতা চুক্তি করবে। সমঝোতা করেই বলবে আওয়ামী লীগের নির্বাচন করার সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ এদেশে গুম-খুন, অত্যাচার-নির্যাতন, গণহত্যা ও লুট করছে। তাহলে অটোমেটিক সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের একটি বার্তা জাতির সামনে দিতে পারতাম। এখন পর্যন্ত আমরা তা করি নাই। তা না করে আমরা রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি করছি। জাতির সামনে এই বিবাদটা নিয়ে আসছি। এটি খুব কষ্টকর, দুঃখজনক।’
এ্যানী আরও বলেন, ‘যে–সকল রাজনৈতিক দল বিভিন্নভাবে বক্তব্য দিচ্ছেন, তা না করে সরকারের সঙ্গে বসেন। এবং সরকারের দায়িত্ব সকল রাজনৈতিক দলকে এক টেবিলে এনে আলাপ–আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এ বিচার প্রক্রিয়াকে দ্রুত সম্পন্ন ও এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধকরণের কাজ সম্পন্ন করা। এজন্য একটি ঐক্যমত-চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া খুব জরুরি। তাই দ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দিন। এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাবুদ্দিন সাবু, লক্ষ্মীপুর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিউকিউটর আহমেদ ফেরদৌস মানিক, বিএনপি নেতা নিজাম উদ্দিন ভূইয়া, বেলাল উদ্দিন ও আনোয়ার হোসেন বাচ্চু প্রমুখ।