" চাঁদের মাটিতে এবার কী খুঁজে পেল চীন? "

চাঁদের মাটিতে এবার কী খুঁজে পেল চীন?

চাঁদ নিয়ে গবেষণা হয়েছে বিস্তর। চন্দ্রপৃষ্ঠের মাটি পরীক্ষা করে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা চাঁদের আদ্যোপান্ত জানার চেষ্টা করে চলেছেন বহু বছর ধরেই। সম্প্রতি চাঁদ নিয়ে গবেষণালব্ধ নতুন এক চমকপ্রদ তথ্য জানালেন চীনের বিজ্ঞানীরা। চাঁদের সবচেয়ে পুরোনো খাদটি (বেসিন) কবে তৈরি হয়েছিল তা নির্ধারণ করতে পেরেছেন বলে দাবি তাঁদের। ১-২ লাখ বছর নয়, চাঁদের সবচেয়ে পুরোনো খাদটির বয়স ৪২৫ কোটি (৪.২৫ বিলিয়ন) বছর। অন্তত চীনের বিজ্ঞানীদের গবেষণা এমনটাই জানাচ্ছে।

চাঁদের মাটির নমুনা পরীক্ষা করে চীনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, চাঁদের প্রাচীনতম খাদ বা বেসিনটি তৈরি হয়েছিল আজ থেকে ৪২৫ কোটি বছর আগে। গত বছর ২৫ জুন চন্দ্রপৃষ্ঠের দূরবর্তী অংশ (ফার সাইড) থেকে প্রায় ২ কিলোগ্রাম মাটির নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে নিয়ে আসে চ্যাঙ'ই-৬ নামের চন্দ্রযান (লুনার প্রোব)। চাঁদের দূরবর্তী অংশ থেকে মাটি সংগ্রহ করে পৃথিবীতে আনার এটিই প্রথম দৃষ্টান্ত।

উল্লেখ্য, পৃথিবীর দিক থেকে চাঁদের নিকটবর্তী অংশটি ভালোভাবেই দৃশ্যমান এবং সেখানে সহজেই পাঠানো যায় বিভিন্ন চন্দ্রযান যেমন লুনার প্রোব (গবেষণার উদ্দেশ্যে পাঠানো চন্দ্রযান) বা মুন ল্যান্ডার। ফলে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের চাঁদ নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে নমুনা সংগ্রহ করা হয় মূলত নিকটবর্তী অংশটি থেকেই। অন্যদিকে, চাঁদের দূরবর্তী অংশটি পৃথিবীর দিক থেকে দৃশ্যমান নয় বললেই চলে, তাই সেখানে চন্দ্রযান পৌঁছানো বেশ কঠিন। ফলে এই চাঁদের দূরবর্তী অংশটি নিয়ে গবেষণা তুলনামূলকভাবে অনেক কম হয়েছে। 

এই প্রেক্ষাপটে চাঁদের দূরবর্তী অংশ থেকে চ্যাঙ'ই-৬ চন্দ্রযানটির নমুনা (মাটি) সংগ্রহের বিষয়টি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ এবং চীনের জন্য বড় সাফল্যও বটে। এবার এই সাফল্যের পরিধি আরও বিস্তৃত করতে সমর্থ হয়েছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। 

চাঁদের সবচেয়ে বড়, গভীর ও পুরোনো খাদ ‘সাউথ পোল-এইটকেন (এসপিএ) বেসিন’ থেকে সংগ্রহীত মাটির নমুনা দীর্ঘদিন পরীক্ষানিরীক্ষা করে চীনের বিজ্ঞানীরা জানালেন যে, এই বেসিনটি সৃষ্টি হয়েছে ৪.২৫ বিলিয়ন বা ৪২৫ কোটি বছর আগে। চাঁদের আর সৌরজগতের প্রথম দিকের অবস্থা বুঝতে সাহায্য করবে তাঁদের এই গবেষণা।   

উল্লেখ্য, চ্যাঙ'ই-৬ লুনার প্রোবটি (গবেষণার উদ্দেশ্যে পাঠানো চন্দ্রযান) গত বছর জুনে সাউথ পোল-এইটকেন বা এসপিএ বেসিন থেকে নমুনা সংগ্রহ করে আনে। চাঁদের দূরবর্তী অংশে অবস্থিত এসপিএ বেসিনটির ব্যাপ্তি প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার। অর্থাৎ চাঁদের প্রায় এক চতুর্থাংশ এলাকা জুড়ে আছে এই খাদ বা বেসিন।

চীনের বিজ্ঞানীদের গবেষণা আরও জানাচ্ছে যে, সৌরজগত সৃষ্টি হওয়ার প্রায় ৩২০ মিলিয়ন বছর পর বিশাল এক সংঘর্ষের (ইমপ্যাক্টের) ফলে তৈরি হয় এসপিএ বেসিন বা খাদটি। চন্দ্রপৃষ্ঠে সংঘটিত সবচেয়ে বড় সংঘর্ষ বা ইমপ্যাক্টের অবশিষ্টাংশ হচ্ছে এই খাদ।

গত বছর চ্যাঙ'ই-৬ লুনার প্রোবটি চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে মাটির নমুনা নিয়ে ফিরে আসার পর থেকেই চীনের বিজ্ঞানীদের গবেষণালব্ধ ফলাফল প্রকাশিত হতে থাকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম ও অ্যাকাডেমিক জার্নালে। 

তথ্যসূত্র: রয়টার্স 

Previous Post Next Post

Random Manga

Ads

نموذج الاتصال