" তারা বঙ্গবন্ধু এবং জিয়াউর রহমানকে মানে না, এটা ভালো কথা নয়: কাদের "

তারা বঙ্গবন্ধু এবং জিয়াউর রহমানকে মানে না, এটা ভালো কথা নয়: কাদের

 

“তারা বঙ্গবন্ধুকে মানে না, তারা জিয়াউর রহমানকে মানে না, তারা আমাদের কাউকেই মানে না। এটা ভালো কথা নয়”-এমন মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

শুক্রবার (৪ মার্চ) বিকেলে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ছাতিহাটী নিজ গ্রামে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, “যে নেতারা একটা বিপ্লব ঘটিয়েছে, আমি তাদের বিপ্লবের জন্য তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। তারা যদি ঠিকভাবে চলতে পারতেন, তাহলে বহু বছর তাদেরকে মানুষ স্মরণ রাখতো। কিন্তু তারা স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলেছে। তারা বঙ্গবন্ধুকে মানে না, তারা জিয়াউর রহমানকে মানে না, তারা আমাদের কাউকেই মানে না। এটা ভালো কথা নয়।”

তিনি আরও বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ আমাকে মানুষ করে দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে আমি রুখে দাঁড়াতে পারবো, এটাও আমার ধারণা ছিল না। তখন আমাদের নেতা ছিলেন বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী। আমরা তার নেতৃত্বেই চলেছি। আল্লাহ আমাদেরকে জয় দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল।”

বঙ্গবীর বলেন, “আজকে এত দালান-কোঠা, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট- বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে এর কিছুই হতো না। কিন্তু বড় দুর্ভাগ্যের বিষয়, আজ অনেকেই সেই স্বাধীনতাকে মনেই করতে চায় না। ৫ই আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। কেউ কেউ মনে করতে চায়, এটা স্বাধীনতার পতন হয়েছে। না, কোনমতেই না।”

তিনি বলেন, “আজকে যে নেতারা একটা বিপ্লব ঘটিয়েছে, আমি তাদের বিপ্লবের জন্য তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। তারা যদি ঠিকভাবে চলতে পারতেন, তাহলে বহু বছর তাদেরকে মানুষ স্মরণ রাখতো। কিন্তু তারা স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলেছে। তারা বঙ্গবন্ধুকে মানে না, তারা জিয়াউর রহমানকে মানে না, তারা আমাদের কাউকেই মানে না। এটা ভালো কথা নয়।”

মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে উপস্থিত জনতার প্রতি আবেগপ্রবণ হয়ে বঙ্গবীর বলেন, “তোমরা আসছো আমার মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে, এজন্য আমার বুক ভরে গেছে। ’৭১-এ বড় ভাই আমার পাশে ছিলেন, জয়ী হয়েছিলাম। ’৭৫-এ পাশে ছিলেন, জয়ী হয়েছিলাম। আজকে আবার আমার বড় ভাই পাশে আছে। দুনিয়ার অর্ধেক আমার বিরুদ্ধে চলে গেলেও আমার কিছু হবে না। আমি সেই জন্য তোমাদের অনুরোধ করব, প্রতিহিংসার জন্য নয়, প্রতিশোধের জন্য নয়। আমি রাজনীতি করি মানুষের পাহারা দেওয়ার জন্য, দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াবার জন্যে।”

তিনি আরও বলেন, “আজ থেকে আবার বলছি যে, আমাদের সক্রিয় রাজনীতি করা দরকার। মায়ের কবর থেকে, বাবার কবর থেকে অনুমতি নিয়ে মানুষের সেবায় আমরা প্রত্যেকেই ঝাঁপিয়ে পড়ব। আমি রাজনীতির সময় রাজনীতি করি, ধর্মের সময় ধর্ম করি, নামাজের সময় নামাজ পড়ি। আমি একটাকে আরেকটার সঙ্গে কখনো জড়াই না।”

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী জাতীয় স্মৃতিসৌধে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ার জন্য কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বলেন, “গত ২৬শে মার্চ জাতীয় স্মৃতিসৌধে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ার জন্য কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমি এর নিন্দা জানাই। স্বাধীন বাংলাদেশের ‘জয় বাংলা’ ছিল মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান। এটা কারো দলের নয়, কোনো ব্যক্তির নয়, কোনো গোষ্ঠীর নয়। এটা মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান, স্বাধীনতার স্লোগান। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন ‘জয় বাংলা’ থাকবে।”

আবেগে আপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, “আমি গত ২৫ বছর একবারের জন্য ‘জয় বাংলা’ বলিনি। আজকে শপথ করে গেলাম,মায়ের কবরে, বাবার কবরে যে, আজ থেকে আমি ‘জয় বাংলা’ বলবো। আমাদের সবার, বাংলাদেশের স্বাধীনতাগামী মানুষের, বাংলাদেশের মানুষের হবে ‘জয় বাংলা’।”


Previous Post Next Post

Random Manga

Ads

نموذج الاتصال