" জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদকে নিয়ে অস্বস্তিতে বাউফল বিএনপি "

জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদকে নিয়ে অস্বস্তিতে বাউফল বিএনপি

 

লন্ডনে আবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাক্ষাতের পর বাউফল উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা অস্বস্তিতে আছেন।

এই সাক্ষাতের পর উপজেলা বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতা হাতাশ হয়ে পড়েছেন। তাদের ধারণা, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত মিলে আসন ভাগাভাগি ও জাতীয় সরকার গঠন করলে বাউফল উপজেলা বিএনপির জন্য তা ক্ষতির কারণ হতে পারে।

স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে বাউফল আসনটি পতিত আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসাবে পরিচিত ছিল। এ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে আসম ফিরোজ ৮ বার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। সেই পতিত আওয়ামী লীগের দুর্গে ফাটল ধরিয়েছেন বিএনপির সাবেক এমপি সহিদুল আলম তালুকদার। ২০০১ সালে নৌকার হেভিওয়েট প্রার্থী আসম ফিরোজকে হারান তিনি। এরপর  থেকে সহিদুল আলম তালুকদারের নেতৃত্বে বিএনপি সুসংগঠিত হতে থাকে।

ধারণা করা হয়, বর্তমানে বাউফলে ৬০ শতাংশ ভোট রয়েছে বিএনপির। এই ভোট কাজে লাগিয়ে যখন বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন, তখন লন্ডনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সাথে জামায়াত আমির ও নায়েবে আমিরের সাক্ষাতে সব হিসাব-নিকাশ বদলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ধারণা, বিএনপি ও জামায়াত যদি আসন ভাগাভাগি করে, তবে এই আসনটি হাত ছাড়া হয়ে যেতে পারে। কারণ এ আসনে প্রার্থী হবেন জামায়াতের ঢাকা মহা নগর দক্ষিণের আমির ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। আর জাতীয় সরকার হলে সেই সরকারের মন্ত্রীও হতে পারেন ড. মাসুদ।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের বাড়ি বাউফলের মদনপুর গ্রামে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে তার ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রাম, তার বিরুদ্ধে মামলা-হামলা ও জেল-জুলুম তাকে রাজনীতিতে ব্যাপক পরিচিত করেছেন। তাছাড়া ড. মাসুদের প্রাণবন্ত বক্তব্য ও সাংগঠনিক তৎপরতা এলাকার মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থন করেন এমন ভেটারদের মাঝেও ড. মাসুদ নিজের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছেন।

তবে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত বেশ কিছু নেতাকর্মী মাসুদের সাথে সখ্যতা রেখে চলায় সাধারণ মানুষ অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

তাদের কারো কারো মতে, বাউফলে জামায়াতের ভোটব্যাংক নির্দিষ্ট সংখ্যার মধ্যে সীমিত। এখানে জামায়াত প্রার্থীকে ভোটে জয়ী হতে হলে সাধারণ ভোটরেদের বাইরেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভোটারদের মন জয় করে ভোট নিতে হবে। অবশ্য সেই কৌশল নিয়েই আগাচ্ছেন জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।

গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর বাউফলে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রতিমাসের ৩-৪ তারিখ এলাকায় অবস্থান করে ঝটিকা কার্যক্রম চালাতেন। প্রতিদিন ৫-৭টি করে প্রোগ্রাম করতেন। গরীব-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাদের খোঁজ-খবর নিয়েছেন, সাহায্য সহযোগিতা করেছেন।

বাউফলে ৩২ হাজারের বেশি হিন্দু ভোটার রয়েছে। আওয়ামী লীগ যদি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে ৭০ শতাংশ হিন্দুদের ভোট ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পক্ষে থাকবে। আওয়ামী লীগ আর হিন্দু ভোটারদের কাজে লাগিয়েই ড. মাসুদ নির্বাচমুখী কার্যক্রম পরিচালিত করছেন বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে।

স্থানীয় বিএনপির কাছে লন্ডনের সভা দুঃচিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। জামায়াতের সাথে সমঝোতা করে আসন ভাগাভাগি করা হলে বিএনপিকে এ আসন ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদকে ছেড়ে দিতে হবে, এমন আশঙ্কা করছেন তারা।

তাই স্থানীয় বিএনপি এই সম্ভাবনাময় আসনটি যাতে হাত ছাড়া হয়ে না যায়, সেজন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Previous Post Next Post

Random Manga

Ads

نموذج الاتصال