বেসরকারি টিভি চ্যানেল জি টিভির একটি টক শোতে সম্প্রতি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী জুলকারনাইন সায়েরের সঙ্গে আলোচনা হয়। এ সময় তাকে প্রশ্ন করা হয়, “আওয়ামী লীগের কিছু অভিযুক্ত সদস্য, যারা গণহত্যার সময় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন, তাদের পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সেনাবাহিনী সহায়তা করেছে বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন। এই বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি?”
জবাবে সায়ের বলেন, “যদি কোনো প্রমাণ থাকে যে সেনাপ্রধান কারো পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন, তাহলে সেই বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানানো উচিত। এটি প্রকাশ্যে আসা উচিত বা প্রচার করা উচিত। আমরা প্রায় ২০০-৩০০ জনের একটি লিস্ট পেয়েছি, যাদের মধ্যে এমপি, বিচারক, পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। তাদের মধ্যে কেউ কোনও মামলায় অভিযুক্ত ছিল না বা কোনো চার্জ ছিল না।”
তিনি আরও বলেন, “৫, ৬, ৭ আগস্টের সময় বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল অনেকটাই অস্থির। তখন দেশে কোনো স্থায়ী সরকার ছিল না। যারা বিদেশে গিয়েছিলেন, তারা স্বেচ্ছায় গিয়েছিলেন, নিজেদের জীবন রক্ষার জন্য। যদি কারো বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকে, তবে বাংলাদেশে তাকে আটকানো বা ডিটেইন করা আইনত সম্ভব নয়।”
এছাড়া তিনি উল্লেখ করেন, “তবে, ৬২৬ জন যদি বাংলাদেশ ছাড়ে, তারা তো নিজের জীবন বাঁচাতে গিয়েছিল। যদি তারা ফিরে আসে, তাদের আটকানোর জন্য কি কেউ নির্দেশ দিয়েছে? কেউ কি বলেছেন, ‘তুমি তাদের আটকাও’? যদি কেউ পালিয়ে যায়, তাহলে কি তাকে আটকানো যায়?”
জুলকারনাইন সায়ের আরো প্রশ্ন তোলেন, “এটি কীভাবে সম্ভব যে সেনা প্রধান এক পক্ষের সহায়তা করেন, তবে বিমান বাহিনী বা সেনাবাহিনী কোনো পদক্ষেপ নেয় না? যদি একজন সেনা প্রধান পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন, তাহলে বিমান বাহিনীর প্রধান কেন ওই বিমানটিকে আটকালেন না?”
তিনি জানান, “এ ধরনের বিষয়গুলো মানুষের চিন্তা-ভাবনা উস্কে দেয় এবং এটি এক ধরনের টার্গেটিং। আমি মনে করি, এটা ভেবে দেখার বিষয় যে, এ ধরনের ঘটনা কতটা সঠিক বা যৌক্তিক।”
সায়েরের মন্তব্যে স্পষ্ট যে, যেসব বিতর্কিত ব্যক্তির পালানোর ব্যাপারে অভিযোগ উঠেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণাদি বা আদালতের মামলা না থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয় এবং এই ধরনের ঘটনাগুলি আরও গভীরভাবে তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।